ঘনকালো চুলের যত্নে তেল (পর্ব- ১)

চুলের যত্নে তেল      

বহু প্রাচীন কাল থেকেই চুলের যত্নে তেল ব্যবহার আমাদের অজানা নয়। ভারতীয় উপমহাদেশের মেয়েরাও চুলের যত্নে তেল ব্যবহার করতো। চুলের জন্য নারিকেল তেল, যয়তুন তেল, নিমের তেল, কালোজিরা তেল এমনকি সরিষার তেলও ব্যবহার করা যায়।

যেহেতু আমরা কেবল নারিকেল তেলকেই চুলের যত্নে বেশি প্রাধান্য দেই, তাই আসুন প্রথমে জেনে নেই এই নারিকেল তেল আমরা কেন ব্যবহার করবো-

কারণ

১. এতে আছে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল উপাদান, ভিটামিন ই ও কে, মিনারেলস এবং অন্যান্য পুষ্টিগুণ।  এছাড়াও রয়েছে প্রোটিন, ফ্যাটি এসিড ,জিংক, পটাশিয়াম। ঘনকালো চুলের যত্নে তেল

২. অন্যান্য তেলের তুলনায় নারিকেল তেলে পানির পরিমান বেশি থাকায় এটি সহজেই মাথার স্কিনে মিশে যায়।

৩. এই তেল ম্যাসাজ করলে মাথার ব্লাড সার্কুলেশন স্বাভাবিক থাকে।

৪. নারিকেল তেলের পুষ্টি ও চর্বি  অনুপাত রয়েছে। যার কারণে এটি ব্যবহারের বৈজ্ঞানিক সুবিধা পরিলক্ষিত হয়।

নারিকেল তেলের ৯৯% ফ্যাট যার প্রধান অংশই সম্পৃক্ত চর্বি।

প্রতি ১০০ গ্রাম নারিকেল তেলে থাকে যা থাকে –

১. ক্যালোরি ৮৯০ কিলোক্যালোরি।
২. স্যাচুরেটেড ফ্যাট ৮২.৫ গ্রাম
৩. মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট ৬.৩ গ্রাম
৪. পলস্যাচুরেটেড ফ্যাট ১.৭ গ্রাম
৫. ভিটামিন ই ০.১১ মিলিগ্রাম
৬. ভিটামিন কে ০.৬ মাইক্রোগ্রাম
৭. আয়রন ০.০৫ মিলিগ্রাম
৮.অন্যান্য উপাদান ৮৬ মিলিগ্রাম

সূত্রঃ উকিপিডিয়া

৫. আপনার চুলে যদি খুশকি থাকে তাহলে এই নারিকেল তেল চুলের খুশকি দূর করতে সাহায্য করবে।

৬. সারাদিন অফিস করে আপনার ক্লান্তি দূর করতেও নারিকেল তেলের ব্যবহার অনস্বীকার্য।

৭. চুল পড়া সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নারিকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন। কারণ চুলের গোড়া শক্ত করতে এবং চুল পড়া বন্ধ হতে এটি সহায়তা করে।

৮. নিয়মিত ব্যবহারে চুল হয়ে ওঠে ঘন কালো।

৯. তাছাড়া এই তেল হেয়ার কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। যার কারনে চুল হয়ে উঠবে মসৃণ।

১০. বাইরে বের হওয়ার সময় সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মী থেকে আপনার চুলকে রক্ষা করবে নারিকেল তেল।

১১. নারিকেল তেল ব্যবহারে চুল তাড়াতাড়ি বড় হয়। যা ব্যবহার করে আপনি পেতে পারেন লম্বা চুল।

১২. এছাড়া কিছু কিছু ময়লা আছে যা সহজে পরিষ্কার হয় না। কিন্তু মাথার ত্বক ও চুলে নারিকেল তেল দিলে তা সহজে দ্রবীভূত হয়ে আপনার চুলকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।

১৩. নারিকেল তেলে আছে লরিক এসিড নামের এক ধরনের ফ্যাটি এসিড, যার দরুণ অন্য যেকোন তেলের চেয়ে এই তেলকে চুল সবচেয়ে দ্রুত শুষে নেয়।

তবে বাজারে ভেজাল নারিকেল তেলের ও অভাব নেই। প্রতিযোগিতার বাজারে  টিকতে গিয়ে সাধারণ জনগণকে ব্যবহার করা ব্যবসায়ীদের একমাত্র পন্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে । ঘনকালো চুলের যত্নে তেল. নারিকেল তেলে ভেজাল ঢুকে কেমিক্যাল মিশ্রিত করার মাধ্যমে।

ভেজাল তেল চেনার উপায় 

১. নারিকেল তেলের সব থেকে বড় গুণ হচ্ছে এটি ঠান্ডা হলে জমে যায়। নারিকেল তেল খাঁটি কিনা তা বোঝার জন্য ৩০ মিনিট ফ্রিজে জমতে দিন। তেল যদি পুরোপুরি জমে গিয়ে থাকে, তাহলে বুঝবেন আপনার তেল একদম খাঁটি।

২. খাঁটি নারকেল তেল একদম পানির কালার হয়ে থাকে। ভেজালযুক্ত নারিকেল তেল বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে।

ভেজাল মুক্ত নারিকেল তেল পেতে আপনি তাই ঘরে বসে তৈরি করে নিতে পারেন নারিকেল তেল। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে যদি আপনার হাতে সময় না থাকে তাহলে নিজের চুলের যত্নে অবশ্যই এমন কারো কাছ থেকে তেল সংগ্রহ করুন যারা বিশ্বস্ত এবং তেল তৈরিতে কোন রকম ভেজাল মিশ্রণ করেনা।

নানা ধরণের রসা, ভুনাসহ বিভিন্ন তরিতরকারি রান্নায়, পিঠা, মিষ্টিসহ নানা মিষ্টান্ন তৈরিতে এই তেল ব্যবহার করা হয়। পাশাপাশি মাথা ঠান্ডা রাখতে,  চুল পড়া কমাতে এ তেল খুব কার্যকরী। সর্বোচ্চ ব্যবহারের জন্য কিছুদিন পরপর এ তেল রোদে দিন।

তবে চুলের যত্নে কেবল নারিকেল তেলই উপকারী এই তথ্য একদমই সঠিক নয়। কার্যকারিতা এবং গুণাগুণ ভেদে চুলের জন্য অলিভ অয়েল ও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ! আসুন অলিভ অয়েলের কার্যকারিতা সম্পর্কে এবং কেন অলিভ অয়েল ব্যবহার করবো সেটা জানবো আমরা আগামী পর্বে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shopping Cart
Home
Shop
Cart
Search