অ্যাপল সিডার ভিনেগার ফার্মেন্টেড আপেলের জুস থেকে তৈরি তরল। আপেলে থাকা প্রাকৃতিক সুগার ফার্মেন্টেশন বা গাজন প্রক্রিয়ায় অ্যালকোহলে পরিণত হয় এবং এই অ্যালকোহল থেকে অ্যাসিটিক এসিড তৈরি হয়। অ্যাসিটিক অ্যাসিডের কারণে অ্যাপল সিডার ভিনেগার গন্ধযুক্ত ও ঝাঁঝালো স্বাদযুক্ত হয়। অ্যাপেল সিডার ভিনেগার হাজার বছর ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রাচীন মিশরীয়, গ্রীক, এবং রোমানরা এটি প্রাকৃতিক ঔষধ এবং সংরক্ষণকারী হিসেবে ব্যবহার করত। হিপোক্রেটিস, যিনি ‘চিকিৎসাবিদ্যার জনক’ হিসেবে পরিচিত, অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করতেন বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের জন্য। আজকের দিনে এটি একটি জনপ্রিয় সুপারফুড হিসেবে পরিচিত এবং প্রাকৃতিক স্বাস্থ্য রক্ষণাবেক্ষণ এবং ওজন কমানোর জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
এই আপেল সিডার ভিনেগার কোন ব্র্যান্ডের?
আমাদের সরবরাহকৃত অ্যাপল সিডার ভিনেগার যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান Bragg এর। কোয়ালিটির দিক থেকে Bragg এর অ্যাপল সিডার ভিনেগার খুবই জনপ্রিয়। তাই আমরা স্বাস্থ্যসচেতন গ্রাহকদের জন্য Bragg অ্যাপল সিডার ভিনেগার বেঁছে নিয়েছি।
ব্র্যাগ অ্যাপল সিডার ভিনেগারের বিশেষত্ব কি?
১। এটি ‘Raw’ এবং অপরিশোধিত ভিনেগার যা অর্গানিকভাবে চাষ করা আপেল থেকে তৈরি।
২। এটি প্রোটিন, এনজাইম এবং উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সমষ্টি “Mother” সংযুক্ত।
৩। এটি USDA কর্তৃক অর্গানিক সার্টিফাইড, Non-GMO এবং গ্লুটেন ফ্রি ভিনেগার।
৪। এটি রেফ্রিজারেশনের প্রয়োজন হয়না, সেবনের আগে হালকা ঝাঁকিয়ে নিলেই হয়।
৫। প্রিজারভেটিভস বা রং মুক্ত ও চিনি মুক্ত।
কেন খাবেন?
✅ হজমে সহায়ক: ACV হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং পেটের সমস্যা, যেমন গ্যাস ও অম্বল, কমাতে সাহায্য করতে পারে।
✅ রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ: এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক। ডায়াবেটিস বা প্রি-ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এটি উপকারী হতে পারে।
✅ ওজন নিয়ন্ত্রণ: ACV ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে, ফলে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ কমিয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। এটি মেটাবলিজম বাড়াতে সহায়ক।
✅ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ: এটি খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এবং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সহায়ক, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
✅ অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ: ACV-তে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু দূর করতে সহায়ক। এটি প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে।
✅ ত্বক ও চুলের যত্ন: আপেল সিডার ভিনেগার ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং অ্যাকনে বা ব্রণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর। এছাড়াও, চুলে এটি ব্যবহারে খুশকি কমাতে এবং চুলকে মসৃণ ও উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।
✅ ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায়: ACV শরীরের ইনসুলিনের প্রতি সংবেদনশীলতা বাড়ায়, যা রক্তের শর্করা ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়ক।
✅ এনার্জি বুস্টার: ক্লান্তি দূর করতে ও শক্তি পুনরুদ্ধার করতে ACV কার্যকর হতে পারে, বিশেষ করে শরীরের অ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে।
✅ ডিটক্সিফাইং প্রভাব: এটি শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সহায়ক এবং লিভার ও কিডনির কার্যকারিতা উন্নত করে।
এছাড়াও, এটি সালাদ ড্রেসিং, সস, এবং পানীয় তৈরিতেও ব্যবহার করা যায়, যা আপনার খাবারকে স্বাস্থ্যকর করে তোলে। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে সেবন না করে পরিমিতভাবে ব্যবহার করাই উত্তম।
মেয়াদ কতদিন?
ঊ: এটার মেয়াদ ৫ বছর দেয়া হয়।
কিভাবে খাবো?
✅ একজন ব্যক্তি অ্যাপল সিডার ভিনেগার কীভাবে খাবেন সেটা নির্ভর করে তিনি কোন উদ্দেশ্যে খাচ্ছেন তার ওপর। যেমন ওজন কমানোর জন্য ব্যবহার করলে ঘুম থেকে উঠে সকালে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে ইসবগুল বা চিয়াসিডের সঙ্গে মিশিয়ে এটি খেলে ভালো উপকার পাওয়া যাবে।
✅ অনেকেই অ্যাপেল সিডার ভিনিগারের সঙ্গে লেবু যোগ করেন, যা একদমই উচিত নয়। লেবুতে সাইট্রিক এসিড এবং অ্যাপেল সিডার ভিনিগারে অ্যাসিটিক অ্যাসিড আছে। দুই ধরনের এসিডযুক্ত খাবার একসঙ্গে খাওয়া ঠিক নয়।
✅ যারা ডায়াবেটিস রোগী, ওষুধ খাচ্ছেন এবং সুগার লেভেল আরেকটু নিয়ন্ত্রণে আনতে চান তারা খাওয়ার আগে বা খাওয়ার ৩০ মিনিট পরে এটি খেতে পারেন।
✅ একজন ব্যাক্তি সারাদিনে সর্বোচ্চ দুই টেবিল চামচ অ্যাপল সিডার ভিনেগার খেতে পারবেন। প্রথমে এক টেবিল চামচ দিয়ে শুরু করে দেখবেন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে কি না। পরে ধীরে ধীরে দুই টেবিল চামচ খাবেন। তবে সারা দিনে এক টেবিল চামচ পরিমাণ খাওয়াই যথেষ্ট। আর যাদের খেতে অসুবিধা হয় তারা আরও কম পরিমাণে এক চা চামচ করে খেতে পারেন।
✅ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা অ্যাপল সিডার ভিনেগার পর্যাপ্ত পরিমাণ পানিতে মিশিয়ে খেতে হবে। অন্তত ২০০ মিলিলিটার পানিতে ১ টেবিল চামচ নিতে হবে। শুধু পানিতে না নিয়ে একটু ইসবগুল, চিয়াসিড বা তোকমার সঙ্গে নিলে বেশি উপকার পাওয়া যাবে।
কাদের খাওয়া উচিৎ নয়?
✅ গলা দিয়ে টক পানি আসা, গলা জ্বলা এ ধরনের সমস্যা থাকলে অ্যাপল সিডার ভিনেগার খাওয়া উচিত না।
✅ যাদের শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা কম থাকে বা মাঝে মাঝে কমে যায় অর্থাৎ হাইপোক্যালেমিয়া আছে, তারা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাবেন না। কারণ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার পটাশিয়ামের মাত্রা কমিয়ে দেয়।
✅ ডায়োবেটিসের রোগী যারা দুই বেলা ইনসুলিন নেন আবার অ্যাপল সিডার ভিনেগার খান, তাদের হাইপোগ্লাইসেমিয়া অর্থাৎ সুগার লেভেল একদম কমে যেতে পারে। তাই এই রোগীরা এটি খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। আর যারা ইনসুলিন না নিয়ে ওষুধ খান এবং সুগার লেভেল সবসময় নিয়ন্ত্রণে থাকে তারা দিনে সর্ব্বোচ্চ একবার খেতে পারবেন। তবে সুগার লেভেল কমে যাওয়ার প্রবণতা থাকলে খাওয়া ঠিক নয়।
✅ যাদের অ্যাসিটিক পাথর তৈরি হয় কিডনিতে তারা অ্যাপল সাইডার ভিনেগার খাবেন না।
✅ যাদের অনেক অ্যালার্জির সমস্যা আছে তারা এটি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন।
✅ যাদের ডেন্টাল সমস্যা যেমন এনামেল ক্ষয়ে যাওয়া, গর্ত হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা আছে তারাও এটি ব্যবহার করবেন না।
✅ যাদের অস্টিওপোরেসিস আছে তাদেরকে এটি খেতে নিষেধ করা হয়। কারণ অ্যাপল সিডার ভিনেগার বোন মিনারেল ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন কে শোষণে বাধা দেয়। ফলে হাড়ের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
Reviews
There are no reviews yet.